ঢাকা ০৫:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমওইউ: পদ্মার পরিচালক থাকবে না এক্সিমে, যাবে না কারো চাকরি

এমওইউ: পদ্মার পরিচালক থাকবে না এক্সিমে, যাবে না কারো চাকরি

দুর্দশায় পড়া পদ্মা ব্যাংক একীভূত হচ্ছে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে; সেই লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের এ দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পুরো মার্জার বা একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে কয়েক মাস। তখন আর পদ্মা ব্যাংকের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। একীভূত ব্যাংকটি এক্সিম ব্যাংক নামেই পরিচালিত হবে। পদ্মা ব্যাংকের সকল গ্রাহক হয়ে যাবেন এক্সিম ব্যাংকের গ্রাহক।

এক্সিম ব্যাংক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, একীভূতকরণের ফলে প্রাথমিকভাবে পদ্মা ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার চাকরি যাবে না। তবে পদ্মার কোনো পরিচালক এক্সিমের পর্ষদে বসতে পারবেন না।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এক অনুষ্ঠানে দুই ব্যাংকের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন ও পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান তাতে সই করেন।

এক্সিম ব্যাংক ও বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিমসহ তিন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

চুক্তি স্বাক্ষর শেষে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, “আমরা এক্সিম ব্যাংক এগিয়ে এসেছি পদ্মা ব্যাংক টেকওভার করতে। আমরা একত্রিত হয়েছি মার্জার করতে, একুইজিশন নয়। পদ্মা ব্যাংক সম্পর্ণূরূপে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে মিলিত হয়ে গেছে। পদ্মা ব্যাংকের আর অস্তিত্ব) থাকল না। পদ্মা ব্যাংকের সকল দায় দেনা এক্সিম ব্যাংক পরিশোধ করবে।’’

এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান আগামী এক মাসের মধ্যে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ করার কথা বললেও এ কাজে আরো বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানান পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আফজাল করিম, যিনি রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তিনি বলেন, “পদ্মা ব্যাংক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে মার্জার করতে নীতিগত সিদ্ধান্তের পর সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হল। এখন তিন থেকে ছয় মাস লাগবে একীভূত হতে।’’

<div class="paragraphs"><p>ফারমার্স ব্যাংককে পুনর্গঠন করার পর নানাভাবে সহযোগিতা করেও পদ্মা ব্যাংককে বাঁচানো গেল না</p></div>

ফারমার্স ব্যাংককে পুনর্গঠন করার পর নানাভাবে সহযোগিতা করেও পদ্মা ব্যাংককে বাঁচানো গেল না

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, “এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক পরস্পরের সমঝোতার ভিত্তিতে একীভূত হতে এমওইউ করল। এখন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করবে মার্জার করতে। এরপর নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান দিয়ে আমরা অডিট করব, দায় দেনা ঠিক করা হবে।”

স্টক এক্সচেঞ্জ ও নিবন্ধকের কার্যালয়ের (আরজেএসসি) আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মার্জার প্রক্রিয়া শেষ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সহযোগিতা করবে বলে মুখপাত্র জানান।

এ প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগবে তা নির্দিষ্ট না করে মেজবাউল হক বলেন, দুই ব্যাংক আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার পর নতুনভাবে কার্যক্রম চালাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক যেদিন অনুমোদন দেবে, সেদিন থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে মার্জার কার্যকর হবে।

পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণের তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানাল এক্সিম ব্যাংক

পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণ করে এক্সিম ব্যাংকের কী লাভ

দুর্দশাগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংক একীভূত হচ্ছে এক্সিমে

<div class="paragraphs"><p>পদ্মা ব্যাংকের আগের নাম ছিল ফারমার্স ব্যাংক। ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৮ সালে পুনর্গঠন এবং পরের বছর পাল্টায় নাম</p></div>

পদ্মা ব্যাংকের আগের নাম ছিল ফারমার্স ব্যাংক। ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৮ সালে পুনর্গঠন এবং পরের বছর পাল্টায় নাম

মার্জারের প্রেক্ষাপট

২০১৩ সালে লাইসেন্স দেওয়া কয়েকটি ব্যাংকের একটি ছিল দ্য ফারমার্স ব্যাংক, লাইসেন্স দেওয়া হয় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে। কিন্তু বিতরণ করা ঋণের প্রায় পুরোটা খেলাপি হয়ে যাওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে মালিকানা-ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে, ২০১৯ সালে নতুন যাত্রায় নাম হয় পদ্মা ব্যাংক।

সে সময় ব্যাংকটি বাঁচাতে সরকারও এগিয়ে আসে। তারল্য সংকট কাটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক আর রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ-আইসিবির মাধ্যম ৭২৯ কোটি টাকার মূলধন জোগান দেওয়া হয়।

কিন্তু নতুন ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকটি জাগেনি। বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আনার ঘোষণা দিয়ে সুবিধা চাইলেও বিনিয়োগ পায়নি।

২০২১ সাল পর্যন্ত পদ্মা ব্যাংকের পুঞ্জীভূত লোকসান ছাড়িয়েছে ৯০০ কোটি টাকার উপরে। পরের দুই বছরের চূড়ান্ত হিসাব মেলেনি এখনো। তবে নাম বদলানোর পরের চার বছরে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটিতে নতুন করে মূলধন থেকেই ক্ষয় হয় ২৪৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

পদ্মা ব্যাংকের আমানত আছে ছয় হাজার ১৪১ কোটি টাকার। অন্যদিকে ব্যবসার পরিধি বা বিতরণকৃত ঋণের আকার গত সেপ্টেম্বর শেষে ছিল সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার উপরে। এর ৩ হাজার ৬৭২ কোটি অর্থাৎ ৬৪ শতাংশই খেলাপি।

বিষয় এক্সিম পদ্মা
পরিশোধিত মূলধন ১৪৪৭.৫৬ ১১১৬ (৬৮ শতাংশ বা ৭২৯ কোটি ৩০ লাখ টাকার সোনালী, রুপালী, জনতা, অগ্রণী ও আইসিবির)
আমানত ৪২,৭০৪ ৬১৪১
ঋণ ৪৫,৯৮৮ ৫৭৬২
খেলাপির পরিমাণ ১৮৭৫ ৩৬৭২
খেলাপির হার ৪.০৪% ৬৩.৭৩%
আদায় অযোগ্য ঋণ ১৫৪৫ ৩৬৩০
মুনাফা ২০২২ ৩৭২ তথ্য নেই
শাখা ১৪৭টি ৫৯টি
জনবল ৩৩৫১ জন ১২০০ জন

এ অবস্থায় আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে পদ্মা ব্যাংককে অন্য কোনো ব্যাংকের হাতে তুলে দেওয়ার আলোচনা শুরু হয়। সেই আলোচনার মধ্যে গত ৩১ জানুয়ারি সরে যেতে হয় পদ্মার চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতকে। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিমকে দেওয়া হয় পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে বলেন, যেসব ব্যাংক ভালোভাবে চলছে না, সেগুলোকে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে পদ্মা ব্যাংকের বিষয়ে তিনি অনুমতি দিয়েছেন।

এরপর গত ১৪ মার্চ এক্সিম ব্যাংক জানায়, পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের পরিচালনা পর্ষদ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সায় পেয়ে পদ্মা ব্যাংকও একই দিন পরিচালনা পর্ষদের সভা করে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়।

সেই প্রক্রিয়া শুরুর জন্য পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে এক্সিম ব্যাংক। একই দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকে দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে মার্জার প্রক্রিয়া শুরু হল।

কী হবে এখন

একীভূত বা মার্জার হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা। অর্থাৎ, দুটি কোম্পানি মিলে একটিতে পরিণত হওয়া। সাধারণত সমজাতীয় দুই কোম্পানি ব্যবসায়িক স্বার্থকে সামনে রেখে একীভূত হয়।

খেলাপি ঋণ এবং নানা কেলেঙ্কারিতে বছরের পর বছর ধরে দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এক ডজনের বেশি ব্যাংক। এসব ব্যাংক এখন দেশের পুরো ব্যাংক খাতের জন্য সমস্যা হয়ে ওঠায় একীভূতকরণ বা মার্জারের বিষয়টি আর্থিক খাতের সংস্কারের আলোচনায় অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক সমস্যাগ্রস্ত এসব ব্যাংককে অপেক্ষাকৃত ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত (মার্জার) করতে চাইছে। সেজন্য একটি রোডম্যাপ ঠিক করার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে এক বছর সময় দিয়ে ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন’ বা পিসিএ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এমওইউ: পদ্মার পরিচালক থাকবে না এক্সিমে, যাবে না কারো চাকরি

এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার, মূলধনের পর্যাপ্ততা, নগদ অর্থের প্রবাহ, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আর্থিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সূচক ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।

সেই সূচকে কাঙ্ক্ষিত মানদণ্ডের নিচে থাকা ব্যাংকগুলোকে ‘দুর্বল’ শ্রেণিভুক্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরুতে ১০টি ব্যাংককে এ তালিকায় আনা হয়েছে। দুর্বল ব্যাংক টেনে তোলার শেষ পদক্ষেপ হিসেবে অন্য ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়টি থাকছে।

এই প্রক্রিয়ার শুরুতে পদ্মা ব্যাংক বিলীন হচ্ছে এক্সিম ব্যাংকে। এমওইউ স্বাক্ষরের পর এখন সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন চাইবে দুই ব্যাংক।

তাদের প্রস্তাব অনুমোদন পেলে তৃতীয় কোনা নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুই ব্যাংকের যাবতীয় হিসাব নিরীক্ষা করা হবে। দায় দেনা ও শেয়ারের হিসাব চূড়ান্ত হওয়ার পর একীভূত হওয়ার অনুমোদন দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন পদ্মা ব্যাংক বিলুপ্ত হবে। তার আগ পর্যন্ত দুটি ব্যাংক স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।

এমওইউ স্বাক্ষরের পর এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পদ্মা ব্যাংকের সকল গ্রাহকের দায়-দায়িত্ব এক্সিম ব্যাংক নেবে। নাম পরিবর্তন হয়ে গেলে পদ্মা নামে আর কিছু থাকবে না।

“পদ্মা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কারো ভয়ের কিছু নেই। কেউ চাকরি হারাবে না। ব্যাংকিং কার্যক্রম আগের মতই চলবে। কোনো গ্রাহকের ক্ষতি হবে না। দুটি ব্যাংক এক হওয়ায় ব্যাংকিং কার্যক্রম আরো শক্তিশালী হবে।”

একীভূত হওয়া পরে পদ্মা ব্যাংকের কোনো পরিচালক এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “দুই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কীভাবে এক্সিম ব্যাংকে সমন্বয় করা যায় তা আমরা দেখব।”

ব্যাংক একীভূত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল কি না– এমন প্রশ্নের উত্তরে নজরুল ইসলাম বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে একটা প্রপোজাল ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের প্রপোজাল দিয়ে বলেছে, তোমরা (এক্সিম ব্যাংক) এটি নিতে পারবে কি না। আমরা তা নিয়েছি। এখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না। শুধু অর্থনীতির স্বার্থে আমরা নিয়েছি।”

বিকেলে এক্সিম ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশের ব্যাংকিং খাতকে আরও সুসংহত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রূপরেখা অনুযায়ী এক্সিম ব্যাংকের সাথে একীভূত হতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে পদ্মা ব্যাংক।

“সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই চুক্তি কার্যকর করা হবে।”

গ্রাহকদের স্বার্থই সবার আগে গুরুত্ব পাবে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “একীভূতকরণের ফলে দুটি ব্যাংকের গ্রাহক, আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডার ও কর্মীবৃন্দ কোনো ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।”

একীভূত হতে এক্সিম বা পদ্মা ব্যাংককে কোনো ছাড় দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন,  “নীতি সহায়তা দেওয়া হবে মাত্র। সেটা ব্যাংকভেদে আলাদা হবে। যে ব্যাংকের যেমন নীতি সহায়তা লাগবে তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’’

মার্জার (একীভূতকরণ) নীতিমালা তৈরির কাজ কতটুকু এগোলো, সেই প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, “নীতিমালার কাজ চলছে। একটা গাইডলাইন আছে। তা আমরা হালনাগাদ করে জানাব। এটি আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।”

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “পরিচালকদের অনিয়ম ও ব্যাংকের জন্য ক্ষতিকারক এমন কোনো দায় পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। মার্জার না হলেও এটি করা হয়।”

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এমওইউ: পদ্মার পরিচালক থাকবে না এক্সিমে, যাবে না কারো চাকরি

আপডেট সময় : ১০:৩৯:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

দুর্দশায় পড়া পদ্মা ব্যাংক একীভূত হচ্ছে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে; সেই লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের এ দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

পুরো মার্জার বা একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে কয়েক মাস। তখন আর পদ্মা ব্যাংকের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। একীভূত ব্যাংকটি এক্সিম ব্যাংক নামেই পরিচালিত হবে। পদ্মা ব্যাংকের সকল গ্রাহক হয়ে যাবেন এক্সিম ব্যাংকের গ্রাহক।

এক্সিম ব্যাংক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, একীভূতকরণের ফলে প্রাথমিকভাবে পদ্মা ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার চাকরি যাবে না। তবে পদ্মার কোনো পরিচালক এক্সিমের পর্ষদে বসতে পারবেন না।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এক অনুষ্ঠানে দুই ব্যাংকের মধ্যে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন ও পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান তাতে সই করেন।

এক্সিম ব্যাংক ও বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিমসহ তিন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

চুক্তি স্বাক্ষর শেষে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, “আমরা এক্সিম ব্যাংক এগিয়ে এসেছি পদ্মা ব্যাংক টেকওভার করতে। আমরা একত্রিত হয়েছি মার্জার করতে, একুইজিশন নয়। পদ্মা ব্যাংক সম্পর্ণূরূপে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে মিলিত হয়ে গেছে। পদ্মা ব্যাংকের আর অস্তিত্ব) থাকল না। পদ্মা ব্যাংকের সকল দায় দেনা এক্সিম ব্যাংক পরিশোধ করবে।’’

এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান আগামী এক মাসের মধ্যে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ করার কথা বললেও এ কাজে আরো বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানান পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আফজাল করিম, যিনি রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তিনি বলেন, “পদ্মা ব্যাংক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে মার্জার করতে নীতিগত সিদ্ধান্তের পর সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হল। এখন তিন থেকে ছয় মাস লাগবে একীভূত হতে।’’

<div class="paragraphs"><p>ফারমার্স ব্যাংককে পুনর্গঠন করার পর নানাভাবে সহযোগিতা করেও পদ্মা ব্যাংককে বাঁচানো গেল না</p></div>

ফারমার্স ব্যাংককে পুনর্গঠন করার পর নানাভাবে সহযোগিতা করেও পদ্মা ব্যাংককে বাঁচানো গেল না

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, “এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক পরস্পরের সমঝোতার ভিত্তিতে একীভূত হতে এমওইউ করল। এখন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করবে মার্জার করতে। এরপর নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান দিয়ে আমরা অডিট করব, দায় দেনা ঠিক করা হবে।”

স্টক এক্সচেঞ্জ ও নিবন্ধকের কার্যালয়ের (আরজেএসসি) আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মার্জার প্রক্রিয়া শেষ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সহযোগিতা করবে বলে মুখপাত্র জানান।

এ প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগবে তা নির্দিষ্ট না করে মেজবাউল হক বলেন, দুই ব্যাংক আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার পর নতুনভাবে কার্যক্রম চালাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেবে। বাংলাদেশ ব্যাংক যেদিন অনুমোদন দেবে, সেদিন থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে মার্জার কার্যকর হবে।

পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণের তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানাল এক্সিম ব্যাংক

পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণ করে এক্সিম ব্যাংকের কী লাভ

দুর্দশাগ্রস্ত পদ্মা ব্যাংক একীভূত হচ্ছে এক্সিমে

<div class="paragraphs"><p>পদ্মা ব্যাংকের আগের নাম ছিল ফারমার্স ব্যাংক। ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৮ সালে পুনর্গঠন এবং পরের বছর পাল্টায় নাম</p></div>

পদ্মা ব্যাংকের আগের নাম ছিল ফারমার্স ব্যাংক। ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৮ সালে পুনর্গঠন এবং পরের বছর পাল্টায় নাম

মার্জারের প্রেক্ষাপট

২০১৩ সালে লাইসেন্স দেওয়া কয়েকটি ব্যাংকের একটি ছিল দ্য ফারমার্স ব্যাংক, লাইসেন্স দেওয়া হয় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে। কিন্তু বিতরণ করা ঋণের প্রায় পুরোটা খেলাপি হয়ে যাওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে মালিকানা-ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আসে, ২০১৯ সালে নতুন যাত্রায় নাম হয় পদ্মা ব্যাংক।

সে সময় ব্যাংকটি বাঁচাতে সরকারও এগিয়ে আসে। তারল্য সংকট কাটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক আর রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ-আইসিবির মাধ্যম ৭২৯ কোটি টাকার মূলধন জোগান দেওয়া হয়।

কিন্তু নতুন ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকটি জাগেনি। বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আনার ঘোষণা দিয়ে সুবিধা চাইলেও বিনিয়োগ পায়নি।

২০২১ সাল পর্যন্ত পদ্মা ব্যাংকের পুঞ্জীভূত লোকসান ছাড়িয়েছে ৯০০ কোটি টাকার উপরে। পরের দুই বছরের চূড়ান্ত হিসাব মেলেনি এখনো। তবে নাম বদলানোর পরের চার বছরে ২০২২ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটিতে নতুন করে মূলধন থেকেই ক্ষয় হয় ২৪৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

পদ্মা ব্যাংকের আমানত আছে ছয় হাজার ১৪১ কোটি টাকার। অন্যদিকে ব্যবসার পরিধি বা বিতরণকৃত ঋণের আকার গত সেপ্টেম্বর শেষে ছিল সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার উপরে। এর ৩ হাজার ৬৭২ কোটি অর্থাৎ ৬৪ শতাংশই খেলাপি।

বিষয় এক্সিম পদ্মা
পরিশোধিত মূলধন ১৪৪৭.৫৬ ১১১৬ (৬৮ শতাংশ বা ৭২৯ কোটি ৩০ লাখ টাকার সোনালী, রুপালী, জনতা, অগ্রণী ও আইসিবির)
আমানত ৪২,৭০৪ ৬১৪১
ঋণ ৪৫,৯৮৮ ৫৭৬২
খেলাপির পরিমাণ ১৮৭৫ ৩৬৭২
খেলাপির হার ৪.০৪% ৬৩.৭৩%
আদায় অযোগ্য ঋণ ১৫৪৫ ৩৬৩০
মুনাফা ২০২২ ৩৭২ তথ্য নেই
শাখা ১৪৭টি ৫৯টি
জনবল ৩৩৫১ জন ১২০০ জন

এ অবস্থায় আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে পদ্মা ব্যাংককে অন্য কোনো ব্যাংকের হাতে তুলে দেওয়ার আলোচনা শুরু হয়। সেই আলোচনার মধ্যে গত ৩১ জানুয়ারি সরে যেতে হয় পদ্মার চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাতকে। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিমকে দেওয়া হয় পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে বলেন, যেসব ব্যাংক ভালোভাবে চলছে না, সেগুলোকে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে পদ্মা ব্যাংকের বিষয়ে তিনি অনুমতি দিয়েছেন।

এরপর গত ১৪ মার্চ এক্সিম ব্যাংক জানায়, পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের পরিচালনা পর্ষদ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সায় পেয়ে পদ্মা ব্যাংকও একই দিন পরিচালনা পর্ষদের সভা করে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়।

সেই প্রক্রিয়া শুরুর জন্য পদ্মা ব্যাংক অধিগ্রহণের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে এক্সিম ব্যাংক। একই দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকে দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে মার্জার প্রক্রিয়া শুরু হল।

কী হবে এখন

একীভূত বা মার্জার হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা। অর্থাৎ, দুটি কোম্পানি মিলে একটিতে পরিণত হওয়া। সাধারণত সমজাতীয় দুই কোম্পানি ব্যবসায়িক স্বার্থকে সামনে রেখে একীভূত হয়।

খেলাপি ঋণ এবং নানা কেলেঙ্কারিতে বছরের পর বছর ধরে দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এক ডজনের বেশি ব্যাংক। এসব ব্যাংক এখন দেশের পুরো ব্যাংক খাতের জন্য সমস্যা হয়ে ওঠায় একীভূতকরণ বা মার্জারের বিষয়টি আর্থিক খাতের সংস্কারের আলোচনায় অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক সমস্যাগ্রস্ত এসব ব্যাংককে অপেক্ষাকৃত ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত (মার্জার) করতে চাইছে। সেজন্য একটি রোডম্যাপ ঠিক করার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে এক বছর সময় দিয়ে ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন’ বা পিসিএ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এমওইউ: পদ্মার পরিচালক থাকবে না এক্সিমে, যাবে না কারো চাকরি

এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার, মূলধনের পর্যাপ্ততা, নগদ অর্থের প্রবাহ, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আর্থিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সূচক ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।

সেই সূচকে কাঙ্ক্ষিত মানদণ্ডের নিচে থাকা ব্যাংকগুলোকে ‘দুর্বল’ শ্রেণিভুক্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরুতে ১০টি ব্যাংককে এ তালিকায় আনা হয়েছে। দুর্বল ব্যাংক টেনে তোলার শেষ পদক্ষেপ হিসেবে অন্য ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার বিষয়টি থাকছে।

এই প্রক্রিয়ার শুরুতে পদ্মা ব্যাংক বিলীন হচ্ছে এক্সিম ব্যাংকে। এমওইউ স্বাক্ষরের পর এখন সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন চাইবে দুই ব্যাংক।

তাদের প্রস্তাব অনুমোদন পেলে তৃতীয় কোনা নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুই ব্যাংকের যাবতীয় হিসাব নিরীক্ষা করা হবে। দায় দেনা ও শেয়ারের হিসাব চূড়ান্ত হওয়ার পর একীভূত হওয়ার অনুমোদন দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন পদ্মা ব্যাংক বিলুপ্ত হবে। তার আগ পর্যন্ত দুটি ব্যাংক স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।

এমওইউ স্বাক্ষরের পর এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পদ্মা ব্যাংকের সকল গ্রাহকের দায়-দায়িত্ব এক্সিম ব্যাংক নেবে। নাম পরিবর্তন হয়ে গেলে পদ্মা নামে আর কিছু থাকবে না।

“পদ্মা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কারো ভয়ের কিছু নেই। কেউ চাকরি হারাবে না। ব্যাংকিং কার্যক্রম আগের মতই চলবে। কোনো গ্রাহকের ক্ষতি হবে না। দুটি ব্যাংক এক হওয়ায় ব্যাংকিং কার্যক্রম আরো শক্তিশালী হবে।”

একীভূত হওয়া পরে পদ্মা ব্যাংকের কোনো পরিচালক এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “দুই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কীভাবে এক্সিম ব্যাংকে সমন্বয় করা যায় তা আমরা দেখব।”

ব্যাংক একীভূত করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল কি না– এমন প্রশ্নের উত্তরে নজরুল ইসলাম বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে একটা প্রপোজাল ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের প্রপোজাল দিয়ে বলেছে, তোমরা (এক্সিম ব্যাংক) এটি নিতে পারবে কি না। আমরা তা নিয়েছি। এখানে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ ছিল না। শুধু অর্থনীতির স্বার্থে আমরা নিয়েছি।”

বিকেলে এক্সিম ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশের ব্যাংকিং খাতকে আরও সুসংহত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রূপরেখা অনুযায়ী এক্সিম ব্যাংকের সাথে একীভূত হতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে পদ্মা ব্যাংক।

“সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই চুক্তি কার্যকর করা হবে।”

গ্রাহকদের স্বার্থই সবার আগে গুরুত্ব পাবে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “একীভূতকরণের ফলে দুটি ব্যাংকের গ্রাহক, আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডার ও কর্মীবৃন্দ কোনো ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।”

একীভূত হতে এক্সিম বা পদ্মা ব্যাংককে কোনো ছাড় দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন,  “নীতি সহায়তা দেওয়া হবে মাত্র। সেটা ব্যাংকভেদে আলাদা হবে। যে ব্যাংকের যেমন নীতি সহায়তা লাগবে তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’’

মার্জার (একীভূতকরণ) নীতিমালা তৈরির কাজ কতটুকু এগোলো, সেই প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, “নীতিমালার কাজ চলছে। একটা গাইডলাইন আছে। তা আমরা হালনাগাদ করে জানাব। এটি আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।”

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “পরিচালকদের অনিয়ম ও ব্যাংকের জন্য ক্ষতিকারক এমন কোনো দায় পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। মার্জার না হলেও এটি করা হয়।”